যুগে যুগে নারীর ন্যায়সঙ্গত অধিকার আদায় আর নারী – পুরুষের সমতা প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে কেউ না কেউ এগিয়ে এসেছেন । আন্দোলন করেছেন , সংগ্রাম করেছেন , নেতৃত্ব দিয়েছেন । পুরুষতান্ত্রীক এই সমাজে নারীর অধিকার আদায় ও প্রতিষ্ঠায় সচেতনতার বিকল্প নেই । তাই নারীবাদীদের বেছে নিতে হয়েছে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রণকৌশল । তবে লেখনীই হচ্ছে সচেতনতা বৃদ্ধির একটি শক্তিশালী ও উত্তম রণকৌশল । যুগশ্রেষ্ট নারীবাদী লেখিকা তসলিমা নাসরিন সেই রণকৌশলটিই বেছে নিয়েছিলেন । লিখেছেন ঘুণেধরা সমাজব্যবস্থার বিরুদ্ধে , পুরুষতান্ত্রীক সমাজের বিরুদ্ধে , ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে , নারী – পুরুষের বৈষম্য নিয়ে । এটাই কাল হয়ে দাঁড়ায় তার জীবনে । মৌলবাদ – সাম্প্রদায়িক শক্তির রােষানলে পড়েন তিনি । ময়মনসিংহ – এ জন্ম নেয়া বর্তমানে ৫৮ বছর বয়সী এই নারীবাদী লেখিকা একাধারে কবি , কলামিস্ট , ঔপন্যাসিক , প্রবন্ধিক । অন্যদিকে একজন মুক্তচিন্তার অধিকারী । তিনি একজন কবি – সাহিত্যিক হলেও নারী অধিকার , মানবাধিকার , ধর্মনিরপেক্ষতা আন্দোলনের সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত । তিনি লেখনীর মাধ্যমে এখনাে সে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন । নারীবাদী এই লেখিকা বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত সাহিত্যিক ও চিকিৎসকও । গত শতাব্দীর আশির দশকে একজন উদীয়মান কবি হিসেবে সাহিত্যজগতে প্রবেশ করেন তসলিমা । ওই শতকের শেষের দিকে নারীবাদী ও ধর্মীয় সমালােচনামূলক রচনার কারণে আন্তর্জাতিক খ্যাতি লাভ করেন । তিনি তার রচনা ও ভাষণের মাধ্যমে লিঙ্গসমতা , মুক্তচিন্তা এবং ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে তার নিজস্ব চিন্তা – চেতনা প্রচার করায় ধর্মীয় মৌলবাদী গােষ্ঠীদের রােষানলে পড়েন । তাদের নিকট হতে হত্যার হুমকি পেতে থাকায় ১৯৯৪ সালে বাংলাদেশ ত্যাগ করেন এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বসবাস করতে বাধ্য হন । তিনি কিছুকাল যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করেন । বর্তমানে তিনি ভারত সরকার কর্তৃক ভারতে অজ্ঞাতবাসে অবস্থানের সুযােগ পেয়েছেন । মাত্র তেরাে বছর বয়স থেকে তসলিমা কবিতা লেখা শুরু করেন । কলেজে পড়ার সময় পাঁচ বছর তিনি সেঁজুতি নামক একটি সাহিত্য পত্রিকা সম্পাদনা ও প্রকাশকের দায়িত্ব পালন করেন । ১৯৭৫ সালে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় তসলিমার কবিতা প্রকাশিত হয় । ১৯৮৬ সালে ‘ শিকড়ে বিপুল ক্ষুধা ‘ নামক তার প্রথম কবিতা সংকলন প্রকাশিত হয় । ১৯৮৯ সালে নির্বাসিত বাহিরে অন্তরে ‘ ও পরের বছর আমার কিছু যায় আসে না ‘ কাব্যগ্রন্থগুলি প্রকাশিত হয় । ওই সময় তসলিমা ঢাকা হতে প্রকাশিত নাঈমুল ইসলাম খান সম্পাদিত খবরের কাগজ নামক রাজনৈতিক সাপ্তাহিকীতে নারী অধিকার বিষয়ে লেখা শুরু করেন । তার কাব্যগ্রন্থ ও সংবাদপত্রের কলামে নারীদের প্রতি মুসলিম মৌলবাদীদের শােষণের কথা লেখায় ১৯৯০ সালে বাংলাদেশের মৌলবাদীরা ওই পত্রিকার অফিস ভাঙচুর করে । সেসময় নির্বাচিত কলাম নামক তার বিখ্যাত প্রবন্ধসঙ্কলন প্রকাশিত হয় , যার জন্য ১৯৯২ সালে তসলিমা আনন্দ পুরস্কার লাভ করেন । পরের বছর অতলে অন্তরীণ , বালিকার গােল্লাছুট ও বেহুলা একা ভাসিয়েছিল ভেলা নামক আরাে তিনটি কাব্যগ্রন্থ ; যাবাে না কেন ? যাব ও নষ্ট মেয়ের নষ্ট গল্প নামক আরাে দুইটি প্রবন্ধসঙ্কলন এবং | অপরপক্ষ , শােধ , নিমন্ত্রণ ও ফেরা নামক চারটি উপন্যাস প্রকাশিত হয় । ১৯৯৩ সালে ‘ লজ্জা ‘ নামক তার পঞ্চম উপন্যাস প্রকাশিত হয় । এই উপন্যাসে বাংলাদেশের মুসলিমদের দ্বারা একটি সংখ্যালঘু হিন্দু পরিবারের ওপর অত্যাচারের বর্ণনা করা হয় । উপন্যাসটি প্রকাশের পর অমর একুশে গ্রন্থমেলায় মুসলিম মৌলবাদীরা তসলিমার ওপর শারীরিকভাবে নিগ্রহ করে ও তার এই উপন্যাস নিষিদ্ধ ঘােষণা করার দাবী জানায় । গ্রন্থমেলা কর্তৃপক্ষ তাকে মেলায় প্রবেশ করতে নিষেধ করেন । ওই বছর অক্টোবর মাসে কাউন্সিল অব ইসলামিক সােলজার্স নামক এক মৌলবাদী সংগঠন তার বিরুদ্ধে ফতােয়া জারি করে । তাকে হত্যার হুমকী প্রদান করে । তসলিমা নাসরিনের সাতটি আত্মজীবনী গ্রন্থের অধিকাংশ বাংলাদেশ ও ভারত সরকার দ্বারা নিষিদ্ধ ঘােষিত হয় । আমার মেয়েবেলা নামক তার প্রথম আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থে ধর্মীয় বিতর্কিত মন্তব্যের কারণে ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধ ঘােষিত হলেও পরের বছর এই বইয়ের জন্য তসলিমা দ্বিতীয়বার আনন্দ পুরস্কার জয় করেন । ২০০২ সালে তার দ্বিতীয় আত্মজীবনী উতাল হাওয়া বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধ ঘােষিত হয় । পরবর্তি বছর ‘ ক ’ নামক তার তৃতীয় আত্মজীবনী বাংলাদেশ উচ্চ আদালত কর্তৃক নিষিদ্ধ ঘােষণা করা হয় । পশ্চিমবঙ্গে এই বইটি দ্বিখন্ডিত নামে প্রকাশিত হলেও ভারতীয় মুসলিমদের একাংশের চাপে নত হয়ে পশ্চিমবঙ্গে বইটি নিষিদ্ধ ঘােষিত হলে সরকারের এই সিদ্ধান্ত লেখক মহলে তীব্রভাবে সমালােচিত হয় । এই নিষেধাজ্ঞা ২০০৫ সালে পৰ্যন্ত বলবৎ ছিলাে । ২০০৪ সালে সেই সব অন্ধকার ‘ নামক তার চতুর্থ আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধ ঘােষণা করা হয় । ১৯৯৪ সালের মে মাসে দ্য স্টেটসম্যান পত্রিকার এক সাক্ষাতকারে তিনি ধর্মীয় আইন অবলুপ্তির মাধ্যমে ধর্মগ্রন্থ সংশােধনের ইচ্ছা প্রকাশ করেন । এর ফলে ইসলামি মৌলবাদীরা তার ফাঁসির দাবী জানাতে শুরু করে । তিন লাখ মৌলবাদীর একটি জমায়েতে তাকে ইসলাম অবমাননাকারী সাম্রাজ্যবাদী শক্তির দালালরূপে অভিহিত করা হয় । দেশ জুড়ে তার শাস্তির দাবীতে সাধারণ ধর্মঘট ডাকা হয় । বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে তার বিরুদ্ধে জনগণের ধর্মীয় ভাবনাকে আঘাত করার অভিযােগে মামলা রুজু করা হয় এবং জামিন – অযােগ্য গ্রেপ্তারী পরােয়ানা জারি করা হয় । সেসময় আলােকচিত্রী শহিদুল আলমসহ বিভিন্ন জনের আশ্রয়ে তিনি দুই মাস লুকিয়ে থাকার পর উচ্চ আদালতের নির্দেশে তার জামিন মঞ্জুর করা হয় এবং তসলিমা বাংলাদেশ ত্যাগ করতে বাধ্য হন । বাংলাদেশ থেকে নির্বাসিত হওয়ার পর তসলিমা প্রথমে সুইডেন ও পরবর্তি দু ’ বছর জার্মানিতে বসবাস করেন । ১৯৯৭ সালে তিনি আবার সুইডেন ফিরে গেলে রাজনৈতিক নির্বাসিত হিসেবে জাতিসংঘের ভ্রমণ নথি লাভ করেন । ওই সময় তিনি সুইডেনের নাগরিকত্বও লাভ করেন ও সুইডিশ কর্তৃপক্ষ ।
॥ রুকসানা রহমান ॥
Thanks a lot for the article post.Much thanks again. Fantastic.restaurants viagra
Знаете ли вы?
Российская учёная показала, что проект «Новой Москвы» 1923 года воспроизводил план трёхвековой давности.
Персонажу французской комедии о Фантомасе советские подростки подражали всерьёз.
Англичане купили заказанную португальцами рукопись голландца и бельгийца с изображениями монархов десяти королевств.
Первый футбольный трофей после начала пандемии коронавируса был разыгран в Таджикистане.
Потомок наполеоновского генерала стал Героем Советского Союза.
arbeca
Thank you for this post. Its very inspiring.cialis kaufen preise
Thanks! And thanks for sharing your great posts every week!canadien viagra en ligne
Thanks so much for the post.Really thank you! Keep writing.online viagra
Thanks for the article post.Really thank you! Great.viagra online