পুরুষশাসিত সমাজ প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর নানা ভাবে বিপর্যস্ত হয়েছে নারীর ন্যায়সংগত অধিকার। ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্ছিত হতে হতে নারীরা যখন একেবারে প্রান্তিক সীমানায় এসে পৌঁছে তখন অধিকার আদায়ের লড়াইয়ে নামা ছাড়া কোন গতি থাকেনা। নারীর অধিকার আদায়ের পক্ষে যারা সমর্থন ও সুযোগ সৃষ্টি করে থাকেন তারাই নারীবাদী।
সাধারণত কিছু পুরুষরা নারীকে অধিকার দিতে ভয় পাচ্ছে পুরুষ। তারা মনে করে অধিকার ভাগ হলে পুরুষের প্রাধান্য চলে যাবে। সুতরাং প্রাধান্য প্রতিষ্ঠার জন্যই নারীকে অধিকার দেওয়া যাবে না। তাদের জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত শেখাতে হবে, তারা পুরুষের সমান নয়। সুতরাং সমাজে, রাষ্ট্রে এবং পরিবারে পুরুষের মতো অধিকার তারা পাবে না।
ভার্জিনিয়া উলফএর একটি উক্তি বিশেষ ভাবে উল্লেখ্যযোগ্য। তার মতে, “আত্মার মাঝে দু’ধরণের শক্তি রয়েছে- পুরুষ সুলভ ও নারী সুলভ। পুরুষদের মস্তিষ্কে নারীসুলভ শক্তির উপর পুরুষসুলভ শক্তি প্রাধান্য বিস্তার করে আর মেয়ের মস্তিষ্কে এর বিপরীত। স্বাভাবিক ও সুখকর অবস্থা তখনই আসবে যখন এ দুয়ের সমন্বয় সাধন ঘটবে। পুরোপুরি পুরুষসুলভ ও পুরোপুরি নারীসুলভ মন কোনটাই সম্ভবত সৃষ্টি শীল কিছু ভালোমতো করতে পারেনা।”
সোশ্যালিস্ট ফেমিনিস্ট এবং রাডিকাল ফেমিনিস্ট- উভয়ের মতে নারীরা বৈষম্য-বঞ্চনার শিকার। ফায়ারস্টোনের মতে , নারী নিপীড়নের মূল যেহেতু জৈবিক, কাজেই উভয়লৈঙ্গিক সমাজ গঠিত হলে সমাজে নারীর ওপর অত্যাচার থাকবে না। সোশ্যালিস্ট ফেমিনিস্ট মনে করে, অর্থই অনর্থের ভূমিকা পালন করছে। ব্যক্তিগত সম্পত্তি তথা পুঁজিবাদ এর মূল কারণ। রাডিকাল ফেমিনিস্ট মনে করে, পিতৃতন্ত্র অথবা পুরুষ প্রাধান্য অথবা পুরুষত্বই নারী নির্যাতনের প্রধান কারণ। তবে দুটি মতই পৃথিবীতে শান্তিপূর্ণ সমাজব্যবস্থার প্রতিষ্ঠা চাচ্ছে। তারা মনে করেন, সব মানুষ জন্মগতভাবে এক। কাজেই মনুষ্যত্ব বিকাশে ও আত্মবিকাশে সবার জন্য একই ধরনের সুযোগ-সুবিধা থাকা উচিত। রাডিক্যাল ফেমিনিস্টরা মনে করেন, বেশির ভাগ নারীরা এখনো পরিবার ও কর্মক্ষেত্র দুটো কাজেই নিজেকে নিয়োজিত রাখেন।
সংগৃহিত